গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ দফতরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সেবাখাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
এবিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসিরা তো কর্মস্থলে থাকবেনই। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে থাকবেন। সেবাখাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঈদের ছুটি নেই। তারা ঈদের পর বাড়ি যাবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ৪ জুলাই সরকারি ছুটি ঘোষণার পর এবার ঈদে সরকারি চাকরিজীবীরা টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন। এ ছুটিতে যে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে মাঠ প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয় সরকার। ২৯ জুন সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনারদের এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এই নির্দেশনা দেন।
মুখ্যসচিব আজাদ বলেন, ‘নয় দিনের লম্বা ছুটিতে ডিসিদের সতর্ক রাখবেন। কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে তারা যেন সজাগ থাকেন।’ সরকারি কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, ‘নয় দিনের ছুটি। ছুটি যত লম্বা আপনাদের রেসপনসিবিলিটি তত বেশি।’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম বলেন, ‘নয় দিন সরকারি ছুটিতে নিরাপত্তার বিষয়টি বড় আকারে দেখা দরকার।’ এই সময়ে ব্যাংকের ভল্টের নিরাপত্তা আরও জোরদারের বিষয়টি তুলে ধরে ‘ঈদের ছুটিতে মানুষ যেন জরুরি চাহিদাগুলো মেটাতে পারেন। নিরাপত্তার বিষয়গুলো ভালোভাবে দেখতে ডিসিদের সঙ্গে যেন কো-অর্ডিনেশন করা হয়। ডিসি অফিস সব সময়ই খোলা থাকবে, এরপরও যেন এক্সট্রা কেয়ার নেয়া হয়- এটাই মেসেজ’ বিভাগীয় কমিশনারদের বলেন সুরাইয়া।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে ভিডিও কনফারেন্সে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বিভাগীয় কমিশনারদের জানান, ব্যাংকিং বিভাগ থেকে ঈদের ছুটিতে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে গুলশান লেকপাড়ের অভিজাত হলি আর্টিজান বেকারি অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে হামলা করে একদল জঙ্গি। রাতভর নাটকীয়তার পর এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৮ জন নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জনকে। রাতেই এই ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইএস (ইসলামিক স্টেট)। এ ঘটনায় স্তম্ভিত হয় পুরো বাংলাদেশ। ঘটনা ফলাও করে প্রচার করে বিশ্ব মিডিয়া। ৩ ও ৪ জুলাই দু’দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে সরকার।
শীর্ষ নিউজ
পাঠকের মতামত